উৎসবের সাজে ঘরকে নতুন রূপ দিন
আপনি হয়তো হালকা আর নিরপেক্ষ রঙ পছন্দ করেন। কিন্তু উৎসবের সময় একটু জমকালো সাজই মানায়। গাঢ় রঙ যেমন পান্না সবুজ, রুবি লাল, ওয়াইন রঙ, বেগুনি, আর রাজকীয় নীল—এইসব রঙ ঘরে রাজকীয় ভাব এনে দেয়। সোনালি, রুপালি আর তামার মতো ধাতব রঙও খুব আকর্ষণীয়। এগুলো আপনার পূজার জায়গার পিতলের জিনিসের সাথেও ভালো মানিয়ে যায়। এই রঙগুলো কাপড় বা ছোট ছোট সাজের মাধ্যমে ঘরে আনুন, দেখবেন ঘরটা একেবারে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে।
🧵 কাপড়: সবচেয়ে সহজ পরিবর্তন
ঘরের রঙ বদলাতে বড়সড় পেইন্টিং করার দরকার নেই। কাপড় দিয়েই রঙ আর টেক্সচার যোগ করা যায়। গাঢ় রঙের ভেলভেট বা সিল্কের পর্দা ঘরে বিলাসিতা এনে দেয়। ব্রোকেড কাজের কাপড় উৎসবের আমেজ বাড়ায়। বিছানার চাদরে যদি সুন্দর ডিজাইন থাকে, তাও ঘরের পরিবেশ বদলে দিতে পারে। আর যদি একটু হালকা সাজ চান, তাহলে কয়েকটা রঙিন বা এমব্রয়ডারি করা কুশন রাখুন। নিরপেক্ষ রঙের সোফার সঙ্গে এই কুশনগুলো উৎসবের ছোঁয়া এনে দেবে। টেবিল রানার বা টেবিলক্লথেও যদি ঐতিহ্যবাহী ডিজাইন থাকে, তাহলে সহজেই ঘরে সৌন্দর্য বাড়বে।



💡 আলো: উৎসবের প্রাণ
আলো ছাড়া কোনো উৎসবই সম্পূর্ণ নয়। এটা ঘরকে উজ্জ্বল করে, আর একটা শান্ত, ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করে। পারंपরিক প্রদীপ বা লণ্ঠন timeless সাজ দেয়। ফেয়ারি লাইট বা স্ট্রিং লাইট যেকোনো ঘরের সঙ্গে মানিয়ে যায়, বিশেষ করে আধুনিক ঘরে। পর্দার রডে বা বারান্দায় ঝুলিয়ে দিন, রেলিংয়ে জড়িয়ে দিন। আর সেই পুরনো সাজানো মোমবাতি—যা কখনো পুরনো হয় না—তাও রাখুন। সাদা মোমবাতি পিতলের স্ট্যান্ডে হোক বা আধুনিক ডিজাইনের হোক, এগুলো ঘরে উষ্ণতা এনে দেয়। যদি একেবারে ঐতিহ্যবাহী সাজে অসুবিধা হয়, তাহলে রঙিন আলো ব্যবহার করুন। আর যদি বাড়িতে ছোট বাচ্চা বা পোষা প্রাণী থাকে, তাহলে LED প্রদীপ বা মোমবাতি ব্যবহার করুন—নিরাপদও হবে।



🌸 গন্ধ: অদৃশ্য সাজ
অনেক সময় আমরা গন্ধকে গুরুত্ব দিই না, কিন্তু এটা ঘরের পরিবেশে বড় প্রভাব ফেলে। ধূপের গন্ধ আর ফুলের সুবাস পূজার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। ঘরের দরজায় ফুলের মালা ঝুলিয়ে দিন বা ফুল দিয়ে রঙোলি তৈরি করুন। জ্যাসমিন বা চন্দনের essential oil ব্যবহার করুন diffuser-এ—এতে ঘরে দীর্ঘস্থায়ী সুবাস থাকবে আর মনও শান্ত হবে। পটপুরি (ফুলের পাপড়ি আর মশলার মিশ্রণ) শুধু সুবাসই নয়, দেখতে সুন্দরও লাগে। আর অবশ্যই সুগন্ধি মোমবাতি রাখুন!



🖼️ দৃশ্য: গল্প বলে এমন সাজ
সবশেষে, এমন কিছু শো-পিস রাখুন যা ঐতিহ্য আর উৎসবের গল্প বলে। পিতল, তামা বা রুপার ধাতব শো-পিস ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়। সাজানো ফ্রেমের আয়না বা কাঁচের জিনিস আলো প্রতিফলিত করে ঘরকে উজ্জ্বল করে। দেয়ালে ঝুলিয়ে দিন ঐতিহ্যবাহী হ্যাঙ্গিং বা ছবি—ফোক আর্ট, মণ্ডল বা দেবদেবীর ছবি (আধুনিক স্টাইলেও হতে পারে)। যদি বিশেষ কিছু না থাকে, তাহলে একটা সাধারণ পিতলের প্রদীপ স্ট্যান্ডও ঘরের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। মনে রাখবেন, এলোমেলোভাবে জিনিস সাজাবেন না। যা রাখবেন, তা যেন উৎসবের ভাবনার সঙ্গে মানিয়ে যায়।

গন্ধর্বী ঘোষ একজন ফ্রিল্যান্স লেখিকা এবং ঘর সাজানোর ভীষণ উৎসাহী। তিনি প্রতিদিনের ছোট ছোট বিষয়েও সৌন্দর্য খুঁজে নিতে ভালোবাসেন। তাঁর লেখায় দেখা যায় কীভাবে সচেতন ও সৃজনশীল ছোঁয়ায় একটা বাড়ি হয়ে ওঠে একটুকরো আপন ঠিকানা।
লিঙ্কডিনের মাধ্যমে লেখিকার সাথে যোগাযোগ করতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক বা ট্যাপ করুন – https://www.linkedin.com/in/gandharbi-ghosh8

